Skip to main content

মুজিববাদ মুর্দাবাদ


 মুজিববাদ মুর্দাবাদ

- নুরুল মোস্তফা কামাল জাফরী, সম্পাদক, TOT - The Oriental Tone

🟣🔴🟡
বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান (শহীদ জিয়া) প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় গোপালগঞ্জে গিয়েছিলেন সমাবেশ করতে। পারেন নাই। গোপালগঞ্জে প্রবেশের সময় শহরের প্রধান প্রবেশ পথে স্থানীয় আওয়ামীপন্থী জনতা মানবপ্রাচীর তৈরি করে জেনারেল জিয়াউর রহমানের গাড়িবহর থামিয়ে দেয়। উত্তেজিত লীগের সমর্থকেরা শহীদ জিয়াকে উদ্দেশ্য করে 'ঘাতক', 'বঙ্গবন্ধুর খুনি' ইত্যাদি বলতে থাকে। মঞ্চ প্রস্তুত থাকলেও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বক্তব্য দিতে পারেন নাই। যে জায়গায় জনসভা হবার কথা ছিল, প্রেসিডেন্ট জিয়া সেখানে উপস্থিত হলে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে চারদিক। বিক্ষোভকারীরা মাইক ছিনিয়ে নেয় এবং মঞ্চ ভাঙচুর করে।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সফরসঙ্গী নিরাপত্তা দল দ্রুত তাকে ঘিরে বেস্টনি তৈরি করে। অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী হেলিকপ্টার যোগে এসে সভাস্থলে অপারেশন চালিয়ে জনাব প্রেসিডেন্টকে হেলিকপ্টার যোগে গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় নিয়ে যান।
এরশাদের ঘটনাও প্রায় একই। রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গোপালগঞ্জ সফরে যান। এরশাদ সামরিক শাসক থেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নিজের রূপান্তর নিশ্চিত করতে গোপালগঞ্জ সফরের উদ্যোগ নেন। তিনি চেয়েছিলেন সেখানে জাতীয় পার্টির জনভিত্তি তৈরি করতে, যার ফলে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়। তার গাড়িবহর কাশিয়ানী ও টুঙ্গিপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকায় গাছ ফেলে অবরোধ করে আটকে দেয়া হয়। ইট,পাথর, বাঁশ, মাটি ইত্যাদি দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়। সভাস্থলে এরশাদের আগেই উপস্থিত হয়ে যায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। তারা সমাবেশ মঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেয়। চেয়ার-টেবিল ভেঙে ফেলে।
এরশাদ গাড়ি থেকে নেমে মঞ্চে উঠতে চাইলে তীব্র হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে দ্রুত সেনাবাহিনী এসে সভা বাতিল করে হেলিকপ্টার যোগে এরশাদ সাহেবকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনে।
প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং স্বৈরশাসক এরশাদ পারেন নাই, তার মানে তার উত্তরসূরীরা কেউ পারবে না? হাসনাত, সার্জিদের কি তাদের পূর্বসূরীদের এই ইতিহাস জানা নাই? অবশ্যই আছে। ইতিহাস জেনেই তারা ইতিহাস বদলাতে গোপালগঞ্জ গেছে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই তারা গোপালগঞ্জ গেছে।
গোপালগঞ্জের হৃদপিন্ডে দাঁড়িয়ে,গোটা দেশবাসীকে সাক্ষী রেখে তারা বজ্র কণ্ঠে স্লোগান দিয়েছে,
"মুজিববাদ মুজিববাদ- মুর্দাবাদ মুর্দাবাদ।
মুজিববাদের আস্তানা-ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও"!
আরেক সর্বজনপ্ৰিয় মহিয়সী নারী (তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী সাবেক ফার্স্টলেডি বেগম খালেদ জিয়া, চেয়ারপারসন, বিএনপি) অত্যাচারিত হতে হতে বলেছিলেন,'গোপালগঞ্জের নামই বদলে দেবো'। শত টরচারেও মহান আল্লাহ সেই মহিয়সী নারীকে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছেন। হয়তো তিনি তার জীবদ্ধসায় দেখে যেতে পারবেন,"সত্যি সত্যি গোপালগঞ্জের নাম বদলে দেয়া হয়েছে"।

Comments

Popular posts from this blog

মার্কস দেবতার জীবন ও কর্ম

মার্কস দেবতার জীবন ও কর্ম নুরুল মোস্তফা কামাল জাফরী ... আমরা যারা মার্কসবাদী, নিজেদের মার্কসের অনুসারী বলে পরিচয় দেই — আমরা মার্কসের অনুসারী একারণে নই যে তিনি অসামান্য প্রতিভাধর ব্যক্তি ছিলেন। কারণ মানব ইতিহাসে আরও অনেক অসামান্য প্রতিভাধর ব্যক্তি আবির্ভূত হয়েছেন। আমরা মার্কসবাদী এজন্য যে, একমাত্র মার্কসই আমাদের সঠিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক পথ দেখিয়ে গেছেন। এই পথ যে শুধুমাত্র পৃথিবীকে বদলে দেবে তা নয়, একইসাথে আমাদেরকেও একটি উচ্চতর সাংস্কৃতিক ও নৈতিক স্তরে নিয়ে যাবে। মার্কস না হয়ে অন্য কেউ যদি এ কাজ করতেন, তবে আমরা তাঁরই অনুসারী হতাম। মার্কসের যুগান্তকারী অবদানকে বুঝতে গেলে মনে রাখতে হবে যে, মার্কসের আগে অন্যান্য দর্শনগুলো ছিল সামাজিক সংগ্রামের সঙ্গে সংযোগবিহীন। এই সমস্ত দর্শন শুধুমাত্র পৃথিবীকে ব্যাখ্যা করেছে। আর যেহেতু এ সমস্ত দর্শনই ছিলো ব্যক্তির নিজ নিজ উপলব্ধি এবং কল্পনা থেকে সৃষ্ট — তাই এগুলো সবই মূলত ভাববাদী। মানুষের ইতিহাসে কার্ল মার্কসই সর্বপ্রথম সমাজবিজ্ঞান ও প্রকৃতিবিজ্ঞানের নানান শাখা হতে বস্তুজগৎ এবং সমাজ-সম্পর্কিত যে বিশেষ জ্ঞানসমূহ অর্জিত হয়েছে তাদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক স্থ...